কর্মক্ষেত্রে ‘অহং’ (ego) বনাম সাক্ষীভাব (witness consciousness)—স্ব-নিরীক্ষার কৌশল
- Arunava Khasnobis
- Aug 5
- 2 min read
সপ্তাহের শেষ প্রেজ়েন্টেশন, ম্যানেজার সামনে, স্লাইড বদলাচ্ছে। হঠাৎ মনে হল— মাথার ভেতরে যে ভয়-উত্তেজনার কথাগুলো ঝাঁপাচ্ছে, ওগুলো আমার নয়; আমি যেন ওদের পাশে দাঁড়িয়ে দেখছি। মুহূর্ত কয়েকের জন্য চওড়া একটা ফাঁক তৈরি হল—এক পাশে উদ্বিগ্ন “আমি”, অন্য পাশে শান্ত একজন দর্শক, যাঁর চোখে কেবল ঘটনা। ওই ক্ষুদ্র বিরতি-আগুনেই পুড়ে মরার বদলে আমি ফাইল খুলে নির্ভার গলায় কথা শেষ করলাম। বস মুচকি হাঁসলেন, হাততালি পড়ল। পরে বুঝলাম—এটাই সাক্ষীভাব বা witness consciousness
১. কেন ‘অহং’-এর লগ-আউট দরকার?
ক্রনিক স্ট্রেস: ইমেইল পুশ নোটিফিকেশনেই হৃদকম্পন বেড়ে যায়।
Threat Bias: দেরিতে রেপ্লাই মানেই চাকরি যাবে—মস্তিষ্ক এমনই গল্প বানায়।
Impostor Syndrome: “সবাই বুঝে যাবে আমি নকল”—রামকৃষ্ণ বলতেন, “অভিমান মানে অন্ধকার”।
সাইকোলজিক্যাল ডায়াগনসিসের ভাষায়
Continuous hyper-arousal ও rumination Generalized Anxiety Disorder-এর (GAD) দুটি কোর লক্ষণ। অহং সাময়িক সুরক্ষা দিলেও দীর্ঘমেয়াদে Cortisol বাড়িয়ে Burnout-এ ঠেলে দেয়।
২. সাক্ষীভাব: উপনিষদ থেকে নিউরোসায়েন্স
মুন্ডক উপনিষদ: “দ্বা সুপার্ণা সয়ুজা সখায়া…”—এক ডালে দুই পাখি; এক খাবারে ব্যস্ত, অন্যটি শুধু দেখে।অনুবাদ: এক আত্মা কর্মে লিপ্ত, আর-এক আত্মা নিঃশব্দ সাক্ষী।
Advaita বলে, পর্যবেক্ষক ও পর্যবেক্ষিত আলাদা নয়; প্রত্যক্ষ “আমি”-বোধ আসলে চেতনার ঢেউ।
Neuroscience এ একে বলে meta-awareness—Anterior Cingulate Cortex সক্রিয় হয়, পার্সোনাল narrative নরমাল দোলায় পড়ে।
কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি (CBT)-তে মিল: cognitive defusion—thought ≠ self.
৩. তিন মিনিটের ডেস্ক-প্র্যাকটিস
Step-by-Step
পৌঁছুন Present-এ: স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে এক শ্বাস-দেখুন—inhale-exhale।
লেবেল দিন: মনে যা আসে সেটি চুপচাপ নাম রাখুন— “Deadline চিন্তা”, “Self-doubt ভাবনা”।
দূরত্ব-দর্শন: মনে বলুন, “আমার মনে এই ভাবনা উঠছে, কিন্তু আমি ভাবনা নই।”
গুড-লাগ সিগন্যাল: পিঠ সোজা, দুই পা মাটি—শরীর ও পৃথিবী সংযোগ মনে করিয়ে দেয় বাস্তবতা।
ফাইল খুলে কাজে ফেরত: Ego-র নাটক মঞ্চের বাইরে রেখে ডকুমেন্ট এডিট করুন।
⏳ সময়: ৩-৪ মিনিট🧭 এফিশিয়েন্সি টিপ: Outlook/Slack-এ focus mode অন রেখে করুন, নয়তো notification-ফাঁকেই ego ঢুকে পড়বে।
৪. দেড় মাসে সাক্ষীভাব গাঁথা—Routine Blueprint
সময় | প্র্যাকটিস | লক্ষ্য |
সকাল ৬:৩০ | ১০-মিনিট Nadi Shodhana (alternate-nostril) | sympathetic-প্যারাসিম্প্যাথেটিক ভারসাম্য |
কাজের ফাঁকে | উল্লিখিত 3-minute Desk Witness Drill | thought-label habit |
দুপুর | Walking Mindfulness (১০০ ধাপ) | embodied awareness |
রাত ১০টা | ১৫-মিনিট Self-Inquiry Journaling—“Who noticed today’s worry?” | metacognitive rewiring |
Evidence Note: ২০২4-এর Journal of Meditation & Mental Health অনুযায়ী, দিনে ১০-মিনিট short-form witnessing ছয় সপ্তাহে cognitive reactivity ২৮ %-এর বেশি কমায়।
৫. অফিস-ফ্রেন্ডলি ভাষা: সাক্ষীভাব ≈ “Mind Monitor”
অনেকে “সাক্ষী” শুনে ভাবেন আধ্যাত্মিক জার্গন। প্রেজ়েন্টেশন-ডেকে বলুন—
Mind Monitor Mode: In-app observer.
Thought Tagging: Outlook rules-এর মতো মনের ইনবক্সে লেবেল।
Gap & Grab: ট্রিগার-গ্যাপ বানাও, তারপর করো কাজটা grab।এভাবে টার্ম বদলালে টিম-মেম্বারও বোঝে, ভাইরালিটিও বাড়ে।
৬. কেন এটা Mental Health-এর টিকা?
Decentering রোগাত্মক নিজস্বতার স্ফীতি কমায়—Depression relapse-র ঝুঁকি घटে।
HRV (Heart Rate Variability) বাড়ে, Parasympathetic tone মজবুত।
Emotional Granularity: নাম ধরে ভাবনা ধরলে Amygdala-র আগুন কম জ্বলে।
আজই ট্রাই করুন—আগামী ৭ দিন, প্রতিবার মেইল পাঠানোর আগে ৩০ সেকেন্ড “Thought Tag” করবেন। ফলাফল লিখে রাখুন; এক সপ্তাহ পর কী পরিবর্তন টের পান দেখুন।
৮. দ্রুত রিক্যাপ
Ego কাজ চালায়, কিন্তু অতিরিক্ত তাপে পুড়িয়েও দেয়।
Witness consciousness মানে নিজের চিন্তা-সিনেমা লাইভ-স্ট্রিম হয়ে চলেছে—আপনি দর্শক।
3-minute ডেস্ক ড্রিল + দৈনিক ধ্যান-জার্নাল = দীর্ঘমেয়াদি ন্যারেটিভ-ডেটক্স।
লাভ—স্ট্রেস কমে যায়, ফোকাস বাড়ে, Mental Health সুরক্ষিত থাকে।



Comments